রাশিয়ার সঙ্গে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা রুখতে প্রথমবারের মতো যুক্তরাজ্যে পারমাণবিক অস্ত্র স্থাপনের পরিকল্পনা করছে আমেরিকা। শুক্রবার পেন্টাগনের নথিপত্র যাচাই করে এক প্রতিবেদনে খবরটি দিয়েছে যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রস্তাবের অধীনে হিরোশিমায় নিক্ষিপ্ত বোমার চেয়ে তিনগুণ শক্তিশালী ওয়ারহেডগুলো সাফোকের আরএএফ লেকেনহেথে স্থাপন করা হবে।
নথিগুলো থেকে জানা যায়, যুক্তরাজ্যের সামরিকঘাঁটিটির জন্য নতুন অস্ত্রের ক্রয়াদেশ দিয়েছে পেন্টাগন। শত্রুপক্ষের আক্রমণ থেকে সামরিক কর্মীদের রক্ষা করার জন্য ব্যালিস্টিক শিল্ডসহ নতুন বেশ কিছু সরঞ্জাম রয়েছে সে তালিকায়। সেখানে কাজ করা মার্কিন সেনাদের জন্য নতুন আবাসন ব্যবস্থা নির্মাণের কাজ আগামী জুন মাসে শুরু হবে।
আরএএফ লেকেনহেথের কাছে ৫০ কিলোটনের বি৬১-১২ গ্র্যাভিটি বোমা থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে—যার ধ্বংসাত্মক ক্ষমতা ১৯৪৫ সালে হিরোশিমায় ফেলা পারমাণবিক বোমার চেয়েও তিনগুণ বেশি।
যুক্তরাষ্ট্র এর আগে আরএএফ লেকেনহেথে পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপন করেছিল। পরে মস্কোর পক্ষ থেকে স্নায়ুযুদ্ধের হুমকি কমে যাওয়ায় ২০০৮ সালে সেগুলো সরিয়ে ফেলা হয়। যুক্তরাজ্যের এই বিমানঘাঁটির জন্য নতুন অস্ত্র ক্রয়ের চুক্তি প্রকাশিত হলে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, যুক্তরাষ্ট্র সেখানে পারমাণবিক অস্ত্র স্থাপন করতে চাইছে।
যুক্তরাজ্যে পারমাণবিক অস্ত্র স্থাপনের পরিকল্পনা প্রসঙ্গে খোলাসা না করে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, উল্লিখিত স্থানে পারমাণবিক অস্ত্রের উপস্থিতি নিশ্চিত বা অস্বীকার করার ব্যাপারে যুক্তরাজ্য এবং ন্যাটোর একটি দীর্ঘস্থায়ী নীতি রয়েছে।
ন্যাটো বাহিনী ও রাশিয়ার মধ্যে সম্ভাব্য যুদ্ধের ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যকে প্রস্তুত থাকার জন্য সম্প্রতি আটলান্টিকের উভয় প্রান্তের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের কাছ থেকেই সতর্কতা এসেছে। এ সপ্তাহের শুরুতে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর বিদায়ী প্রধান জেনারেল স্যার প্যাট্রিক স্যান্ডার্স বলেছিলেন, সম্ভাব্য সংঘাতের জন্য আরও ভালোভাবে প্রস্তুত হতে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর ৭৪ হাজার কর্মকর্তার মধ্যে কমপক্ষে ৪৫ হাজারকে মোতায়েন রাখতে হবে। জনগণকেও যুদ্ধের জন্য ডাকা হবে। কারণ সেনাবাহিনীর আকার বেশ ছোট।
