মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ১৬, ২০২৫

বান্ধবীর’ সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থা: সহকর্মীকে পিটিয়ে হত্যা

বান্ধবীর’ সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থা: সহকর্মীকে পিটিয়ে হত্যা

জুয়েল মিয়া ও আখতার হোসেন দুই বন্ধু। জুয়েল মিয়া আখতারকে ‘বান্ধবীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলে’। এর জেরে নিরাপত্তাকর্মী জুয়েল মিয়াকে (২০) লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে তারই সহকর্মী আখতার হোসেন (২০)। 

বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) এইচএম আজিমুল হক। 

পুলিশ জানায়, গত মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৫টায় মোহাম্মদপুর মিরপুর রোডে সিদীপ নামে একটি বেসরকারি এনজিও অফিসের ভেতর এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় হত্যায় জড়িত ঘাতক আখতারকে গ্রেফতার করেছে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ।  

সংবাদ সম্মেলনে হত্যাকাণ্ডের ঘটনার বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন ডিসি। তিনি বলেন, জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ জানতে পারে মিরপুর রোডের বেসরকারি এনজিও ‘সিদীপ’ এর কার্যালয়ের পাওয়ার সাব-স্টেশন রুমের ভেতর থেকে নিরাপত্তাকর্মী জুয়েলের হাত-পা বাঁধা অবস্থায় মরদেহ পাওয়া গেছে। পরে মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ। 

ঘটনার তদন্তে নেমে ভবনের রাতের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করি আমরা। ভিডিওতে দেখা যায়, ২৩ জানুয়ারি ভোর ৫টা ৬ মিনিটের দিকে অপর নিরাপত্তাকর্মী আখতার হোসেন একটি স্টিলের পাইপ হাতে ভবনের দক্ষিণ পাশের চেয়ারে কম্বল মুড়িয়ে শুয়ে থাকা তার সহকর্মী জুয়েল মিয়ার দিকে এগিয়ে যায়।  লাঠি দিয়ে জুয়েলকে উপর্যুপরি আঘাত করতে থাকে। জুয়েলের হাত বেঁধে কম্বল মুড়িয়ে পাওয়ার সাব-স্টেশন রুমের ভেতর ঢুকিয়ে রুমটি বন্ধ করে দিয়ে পালিয়ে যায় আখতার।  

ডিসি জানান, হত্যার পরে আখতার আলামত নষ্ট করে। এই ঘটনায় নিহতের পরিবার মামলা দায়ের করে। মামলা তদন্তে নেমে নিরাপত্তাকর্মী আখতারকে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় রাজধানীর পুরান ঢাকার নাজিরাবাজার এলাকার একটি কারখানায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়। 

ডিসি আজিমুল হক বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে ঘাতক আখতার আমাদেরকে জানায়- সে দেড় বছর ধরে সিদীপ নামের এনজিও কার্যালয়ে নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে কাজ করে আসছে। জুয়েল মিয়া চলতি মাসের এক তারিখ একই প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে যোগ দেয়। জুয়েল মিয়া ডিউটি চলাকালে প্রায় সময়ই অফিসের বাইরে যেতে চাইলে আখতার হোসেন তাতে বাধা দিত। এতে উভয়ের মধ্যে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। আখতার আগে থেকে এই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করার সুবাদে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তার সু-সম্পর্ক গড়ে উঠে এবং সে এটির সুযোগ নিয়ে অন্যদের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করত। জুয়েল এটি মেনে নিতে পারেনি। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে আসামি আখতার তার বান্ধবী পরিচয়ে এক ‘যৌনকর্মীকে’ রাতে অফিসে নিয়ে আসে এবং জুয়েল তাদেরকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলে। বিষয়টি নিয়ে জুয়েল আসামি আখতারকে সবাইকে জানিয়ে দেওয়াসহ বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখায়। এনিয়ে তাদের মধ্যে চরম বিরোধ জন্মায়।