প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের এখন উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে হবে। এই দেশ গড়ে তুলতে হলে কাকে দরকার? আপনারা বলেন। কে ক্ষমতায় থাকলে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশ গড়ে উঠবে? একমাত্র নৌকা মার্কা, নৌকা মার্কা যদি ভোট পায়, শুধুমাত্র নৌকা মার্কা ভোট পেলেই আমি সরকারে আসতে পারব। আর উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে গড়তে পারব। বাংলাদেশ কখনো পিছিয়ে যাবে না।
মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) বিকেলে ফরিদপুরের সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ মাঠে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আজকে আমি আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। প্রতি বছরই নির্বাচনের আগে আসি। আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এই নির্বাচনে আমি আমাদের প্রার্থীদের আপনাদের কাছে পরিচয় করিয়ে দিতে এসেছি। নৌকা মার্কায় ভোট চাইতে আজকে আমি আপনাদের মাঠে এসে হাজির হয়েছি।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু তার জীবনকে উৎসর্গ করেছিলেন মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য। তিনি আজীবন সংগ্রাম করে, জেল-জুলুম সহ্য করে এই দেশকে স্বাধীন করেন। এমনকি এই ফরিদপুর জেলেও তিনি বন্দি ছিলেন। দেশ আজ স্বাধীন। জাতির পিতা যে মুহূর্তে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাকে গ্রেপ্তার করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। এরপর আমরা যখন স্বাধীন হই তখন আন্তর্জাতিক চাপে তাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। ১০ জানুয়ারি তিনি ফিরে এসে একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পেয়েছিলেন। রাস্তা-ঘাট নেই, স্কুল কলেজ মসজিদ মন্দির সবই ভাঙা। এই দেশে যুদ্ধকালীন সময়ে কোনো ফসল হয়নি। গোলায় এক ফোঁটা ধান নেই, কারণ পাকিস্তানিরা আগুন দিয়ে গ্রামের পর গ্রাম আগুন দিয়ে ছাড়খাড় করে দিয়েছিল। কোনো কারেন্সি নোট ছিল না, একটা পয়সাও রিজার্ভ মানি ছিল না।
শেখ হাসিনা বলেন, শূন্য হাতে ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে জাতির পিতা যাত্রা শুরু করেন। বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ছিল মাত্র ৯২ ডলার। ওই অবস্থা থেকে মাত্র ৩ বছর সাত মাসের ব্যবধানে এই বিধ্বস্ত দেশে তিনি রাস্তা-ঘাট, স্কুল-কলেজ, মাদরাসা, রেল গড়ে তোলেন। দেশ যখন উন্নয়নের দিকে ধাবিত হয় তখন নেমে আসে এক অমানিশার অন্ধকার। ৭৫ এর ১৫ আগস্টে সেই দিন জাতির পিতা শেখ মুজিবসহ আমার পরিবারের অন্য সদস্যদের হত্যা করে ওই খুনিরা। যারা আমাদের স্বাধীনতা চায়নি। সাথে ছিল আমাদের কিছু বেঈমান মোনাফেক। সেদিন আমি ও আমার বোন দেশে না থাকায় প্রাণে বেঁচে যাই। তখন রিফুইজি হিসেবে আমাদেরকে থাকতে হয়েছিল।
এ সময় মাগুরা-১ আসনের প্রার্থী সাকিব আল হাসান সম্পর্কে তিনি বলেন, আমাদের একটা রত্ন আছে। এই রত্নটা ক্রিকেট রত্ন। মাগুরা-১ আসনে আমরা এবার নমিনেশন দিয়েছি, সাকিব আল হাসান। সে বলেছে বক্তৃতা দিতে পারে না। আমি বলেছি বক্তৃতা দেওয়ার দরকার নাই। তুমি শুধু বলবা তুমি ছক্কা মারতে পারো, আর বল করে উইকেট ফেলে দিতে পারো, তাহলেই হবে। এইবার ইলেকশনেও ছক্কা মেরে দিও।
ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনের আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী শামীম হকের সভাপতিত্বে ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক আরিফের সঞ্চালনায় সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন সাকিব আল হাসান, ফরিদপুর-২ আসনের প্রার্থী শাহদাব আকবর, ফরিদপুর-৩ আসনের শামীম হক, ফরিদপুর-১ আসনের আবদুর রহমান, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল, ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ফরিদপুর পৌরসভার মেয়র অমিতাভ বোস, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মোহাম্মদ ফারুক হোসেন, মাসুদুল হক, সাইফুজ্জামান সেলিম প্রমুখ।
